পাবলিক নিউজঃ আসানসোল:– আসানসোল, স্কুল পড়ুয়াকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ধৃত চিকিৎসক ডাঃ রমন রাজের শুক্রবার জামিন হলোনা। ১ দিন পুলিশ রিমান্ড শেষে শুক্রবার কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ রমন রাজকে আসানসোল আদালতে এডিজে ( দ্বিতীয়) তানিয়া ঘোষের এজলাসে পেশ করেছিলো আসানসোল মহিলা থানার পুলিশ। এই ঘটনার তদন্তে আরো জেরা করার জন্য পুলিশ ধৃত চিকিৎসককে আরো তিনদিনের রিমান্ড চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন করেছিলো। কিন্তু সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক চিকিৎসকের জামিন ও পুলিশের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে ৬ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এই প্রসঙ্গে এই মামলার পিপি বা সরকারি আইনজীবী তাপস উকিল বলেন, পকসো কোর্টের বিচারক ছুটিতে আছেন। তাই ধৃতকে এদিন পকসো কোর্টের দায়িত্বে থাকা এডিজের ( দ্বিতীয়) এজলাসে পেশ করা হয়েছিলো। পুলিশ তিনদিনের রিমান্ড চেয়েছিলো। কিন্তু বিচারক তা নাকচ করে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ২৮ নভেম্বর তাকে পকসো কোর্টে পেশ করা হবে। সেদিন তার জামিনের শুনানি হবে।
এদিকে, শুক্রবার ১৪ বছর নাবালিকা ঐ স্কুল পড়ুয়া আসানসোল আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তবে এখনো পর্যন্ত ঐ নাবালিকার মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার তাকে পুলিশ পরীক্ষার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেছিলো। কিন্তু সে এই মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট মহিলা চিকিৎসককে জানায়, তার কিছু শারীরিক সমস্যা আছে। তাই সে এখন মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে চায়না। পরে তা সে করবে।
প্রসঙ্গতঃ, আসানসোলের নামী একটি গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া এই নাবালিকার পরিবারের তরফে বুধবার আসানসোল মহিলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিলো। তাতে বলা হয়, ঐ নাবালিকা গত ১৫ নভেম্বর আসানসোলের সেনরেল রোডের ওয়েষ্ট আপকার গার্ডেনে ঐ চিকিৎসকের চেম্বারে চিকিৎসার জন্য গেছিলো। তখন ঐ চিকিৎসক পরীক্ষা নামে তার সঙ্গে যৌন নির্যাতন করে। সঙ্গে সঙ্গে নাবালিকা কিছু না বললেও, পরে সে গোটা ঘটনার কথা বাড়ির লোকদেরকে বলে। গোটা বিষয়টি স্কুল কতৃপক্ষকেও বলা হয়। স্কুলের তরফেও পুলিশের কাছে এই ঘটনা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতে পুলিশ চিকিৎসককে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে পুলিশ বিএনএসের একাধিক ও পকসো আইনের একটি ধারায় মামলা করে। বৃহস্পতিবার তাকে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়েছিলো। কিন্তু বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ নিয়ে চিকিৎসক মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে যথেষ্ট নামী এই চিকিৎসকের কাছে যারা চিকিৎসা করান, তাদের দাবি, এর পেছনে অন্য কোন কিছু থাকলেও থাকতে পারে। তারা এই ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন।