প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভের ত্রিবেণী সঙ্গমে ১৪৪ বছরের মৌনী অমাবস্যার বিশেষ সময়ে স্নান করতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হল জামুড়িয়ার কেন্দা এলাকার বছর ৪২ এর বিনোদ রুইদাসের

পাবলিক নিউজঃ অলোক চক্রবর্তী জামুড়িয়া : প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভের ত্রিবেণী সঙ্গমে ১৪৪ বছরের মৌনী অমাবস্যার বিশেষ সময়ে স্নান করতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হল জামুড়িয়ার কেন্দা এলাকার বছর ৪২ এর বিনোদ রুইদাসের। তার সঙ্গে থাকা শালক বিষ্ণু রুইদাস, ও তার বন্ধু প্রেম, সমস্ত ঘটনা চোখের সামনে লক্ষ্য করলেও মানুষজনের প্রচন্ড ভিড়ে নিরুপায় হয়ে কোনক্রমে নিজেদের রক্ষা করলে বিনোদকে রক্ষা করতে পারে না তারা।
ভয়াবহ এই মুহূর্তের প্রত্যক্ষদর্শী কিশোরীরা জানালো তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।
মহাকুম্ভের মৌনী অমাবস্যার স্নান তাদের এতটাই আতঙ্কিত করে তুলেছে যে ভয়ে শিউরে কেঁদে উঠেছেন। চারিদিকে চিৎকার শুনেছেন বাঁচাও বাঁচাও, কিন্তু কেউ বাঁচাতে আসছে না, চোখের সামনেই পরপর মৃত্যু দেখে শিউরে উঠেছে গা। মহিলা শিশু ও শুয়ে থাকা মানুষ জনের উপর হাজারে হাজারে মানুষ পিষে দিয়ে যাচ্ছে। মুহূর্তেই কয়েকটা কথা বলে আতঙ্কিত কিশোরী জানালেন নিচের রাগ, রোষ, জ্বালার কথা।সকলের একটাই উদ্দেশ্য কুম্ভ স্নানে কে আগে পৌঁছবে সময়মতো হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ সালে অমৃত স্নানের শুভ মুহূর্ত শুরু,আর সেখানেই সেই বিশেষ মুহূর্তে কিভাবে গঙ্গা-যমুনা ও অন্তঃসলিলা সরস্বতী নদীর পবিত্র সঙ্গমস্থলে স্নান করতে গিয়ে হুটোপুটি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। ভোর রাতে প্রায় সাড়ে তিনটে নাগাদ অনেকেই সে সময় স্নান করতে গেলে একে অপরের ওপর আছড়ে পড়ে অসংখ্য পুণ্যার্থী। আর সেই ভিড়েই চাপা পড়ে জামুরিয়ার বছর ৪২ এর বিনোদ। তার শালক বিষ্ণু রুইদাসের দাবি মুহুর্তে তারা তিনজনে তিনদিকে হয়ে যায়। আর এরপরই খোঁজ তল্লাশি করে তাকে খোঁজ না পেয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে খোঁজ করে তার দীর্ঘ খোঁজ- তল্লাশির পর মৃতের তালিকায় তার নাম দেখে সে জানতে পারে যে তার জামাই ও মারা গেছেন।
এরপরই সেখানের পুলিশ প্রশাসন ৩০ তারিখ দুপুরে তার দেহটিকে উত্তরপ্রদেশের শববাহী জানে একজন উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে সঙ্গে দিয়ে তার শালক ও এক সঙ্গী কে সঙ্গে করে চালক দিয়ে পাঠিয়ে দেয় বাড়ির উদ্দেশ্যে তবে তার দেহর কোন ময়না তদন্ত হয় না। এ মুহূর্তে জামুরিয়া থানার কেন্দা ফাঁড়িতে দেহটিকে নিয়ে আসা হলেও দেহটির যেহেতু ময়নাতদন্ত হয়নি তার জন্য দেহটি আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে বলেই জানা গেছে। যদিও দেহটিকে কিভাবে ময়না তদন্ত ছাড়াই যোগী সরকার পাঠিয়ে দিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা। অনেকেই দাবি করেছেন যোগী সরকার মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে এরূপভাবে দেহ পাঠিয়ে দিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিংহ অবশ্য দাবী করেছেন যে, না কোন ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হবে না উত্তর প্রদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে, তারা এ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। জানা গেছে কুম্ভ মেলায় মৃতদের জন্য ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছে যোগী সরকার তবে সেই ক্ষতিপূরণ আদপে তারা পাবে কিনা তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। এ মুহূর্তে কেন্দা পুলিশ ফাঁড়িতে মৃতের পরিজনেরা জমায়েত হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More posts