
পাবলিক নিউজঃ ডেস্ক আসানসোলের:- সালানপুর থানার রবিবার রাত দেড়টা থেকে রূপনারায়ণপুরের পিঠাকিয়ারির ফকরাডি এলাকায় পৃথ্বীরাজ জয়সওয়াল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। রবিবার রাত দেড়টা থেকে এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। অন্যদিকে, রুপনারাণপুরের হটাৎ কলোনির জমি ব্যবসায়ী অশোক দাসের বাড়িতে সোমবার সকালে একইভাবে অভিযান চালায় পুলিশ।
জানা গেছে, এই অভিযানের পরে দুটি বাড়ি পুলিশ সিল করেছে। পৃথ্বীরাজের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। তার বাড়ি থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি ঐ বাড়ি থেকে দুটি গাড়ি ও ছয়টি মোটর বাইক, কয়েক লক্ষ টাকা ও কিছু নথিপত্র পাওয়া গেছে। অন্যদিক, অশোক দাসের বাড়ি থেকেও দুটি গাড়ি পুলিশ পায়। সেগুলোও আটক করা হয়েছে। দুর্গাপুর থানার পুলিশের সঙ্গে সালানপুর থানা ও রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ এই অভিযানে ছিলো । দুর্গাপুরে দিন কয়েক আগে এক ব্যবসায়ীর ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুই পুলিশ কর্মী সহ ৬ জনকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই দুই বাড়িতে অভিযান চালানো হয় বলে পুলিশের এক আধিকারিক সোমবার জানিয়েছেন।

রূপনারায়নপুরের ফকরাডিতে পৃথ্বীরাজ জয়সওয়ালের তিন তলা বড়সড় বাড়িটি উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। ভেতরে একাধিক চারচাকা ও দুই চাকা গাড়ি রাখার গ্যারেজ আছে। বাড়ির চারিদিকে সিসিটিভিতে মোড়া। স্থানীয় প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, আড়াই বছর আগেই ঐ পরিবার এখানে বাড়িটি করেছেন। কিন্তু তাদের কিসের ব্যবসা আছে তা তার জানা নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রূপনারায়ণপুর হিন্দুস্তান কেবলস রোডের পাশে পৃথ্বীরাজের রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
অন্যদিকে অশোক দাসের স্ত্রী চঞ্চলা কুমারী বলেন, পুলিশ এসে আমাদের বাড়িটা সিল করেছে। আমার স্বামীর সাথে কথা হয়নি। স্বামী নেই বাড়িতে। ওরা ঘরের ভেতরে টাকা খুঁজছিলেন। কিছুই তারা পায়নি। আমার স্বামী জমি প্লটিংয়ের কাজ করেন বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গতঃ, দিল্লির বাসিন্দা ব্যবসায়ী মুকেশ চাওলার কাছ থেকে ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা দূর্গাপুর থানার এক পুলিশ এবং তার সঙ্গীরা গত ৫ সেপ্টেম্বর ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছিলো। দুর্গাপুরে ১৯ নং জাতীয় সড়কে এই ঘটনা ঘটেছিলো। দিল্লির লাজপত নগরের বাসিন্দা রেলের ঠিকাদার মুকেশ চাওলা ব্যবসায়িক কাজকর্মে ঐদিন আসানসোলে আসেন তার ব্যবসার অংশীদারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার জন্য।

বিকেলে তিনি এবং তার সঙ্গী উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের মনোজ কুমার সিং এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার অমিত সিংকে নিয়ে কলকাতা রওনা দেন। পথে দুর্গাপুরে ১৯ নং জাতীয় সড়কে পিয়ালা কালীবাড়ির কাছে কয়েকজন ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার পরিচয় দিয়ে তার গাড়ি আটকান। গাড়ি পরীক্ষার নামে ব্যবসায়ীর কাছে থাকা ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ দুর্গাপুর থানায় কর্মরত এ এস আই অসীম চক্রবর্তী, সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের এএসআই চন্দন চৌধুরী, বরখাস্ত পুলিশ কর্মী মৃত্যুঞ্জয় সরকার, গাড়ির চালক দুর্গাপুরের ধান্দাবাগের সুরজ কুমার রাম এবং দুর্গাপুরের রানা প্রতাপ এলাকার আশিস মার্কেটের সুভাষ শর্মাকে গ্রেফতার করে। সেই টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার সূত্র পেতে আসানসোলের সালানপুর থানার রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ি এলাকার পৃথ্বীরাজ জওসওয়াল ও অশোক দাসের বাড়িতে দুর্গাপুর থানার পুলিশ তল্লাশি চালায়। পুলিশের পক্ষ থেকে এ তল্লাশি নিয়ে নির্দিষ্ট করে কোন কিছু বলা হয়নি। পরে সব জানানো হবে বলে পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।

Leave a Reply