রেল শহর চিত্তরঞ্জনে চাঞ্চল্য / আবাসনে গৃহবধূকে গলা কেটে নৃশংস খুন, তদন্তে পুলিশ চিত্তরঞ্জন ও আসানসোল,

পাবলিক নিউজ আসানসোল :– রেল শহর চিত্তরঞ্জন রেল আবাসনের ভেতরে গৃহবধূকে গলা কেটে ও কুপিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করলো দূষ্কৃতিরা। রেল শহরের আমলাদহি এলাকার ২৮ নম্বর স্ট্রিটের ৪৬/২ডি নং রেল আবাসন থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পরে রক্তাক্ত গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এক রেল কর্মীর স্ত্রী ঐ গৃহবধূকে নৃশংসভাবে খুন হওয়ার ঘটনা জানাজানি হতে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মৃতার নাম সঞ্চিতা চৌধুরী (৫৬)। তার স্বামী প্রদীপ চৌধুরী চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার ক্রেন ড্রাইভার পদে কর্মরত আছেন।
শুক্রবার দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে গৃহবধূর মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। গৃহবধূর গলা ধারালো কোন অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে। এছাড়াও গৃহবধূর শরীরে ১২ টি বেশি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ এই ঘটনায় একটি খুনের মামলা করে তদন্তে নেমেছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিত্তরঞ্জনে রেল আবাসনে একাই ছিলেন গৃহবধূ সঞ্চিতা চৌধুরী। স্বামী প্রদীপ চৌধুরী রেল ইঞ্জিন কারখানায় কাজে ছিলেন। প্রদীপবাবুর ছেলে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে আছে। সেখানে থেকে সে মাকে সন্ধ্যার পরে ফোন করে। কিন্তু বারবার ফোন করলেও, তার মা তা ধরেনি। তাই সে বাবাকে ফোন করে, মায়ের ফোন না ধরার কথা বলে। বাবা তখন কারখানায় কাজ করছিলেন। তিনি রাত আটটা বাড়িতে এসে দেখেন দরজা খোলা। আরো দেখেন বাইরের ঘরে রক্ত ভর্তি। বিছানায় রক্ত। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি হতচকিত হয়ে পড়েন। এরপর তিনি ভেতরে ঢুকে দেখেন বাথরুমের কাছে গলা কাটা রক্তাক্ত অবস্থায় সঞ্চিতা দেবী পড়ে আছেন। তিনি চিৎকার করে আশপাশের লোকেদের ডাকেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা দৌড়ে আসেন। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে চিত্তরঞ্জন থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ ইসমাইল আলি পুলিশ কর্মীদের নিয়ে সেখানে আসেন। আরপিএফ আধিকারিকরাও খবর পেয়ে পৌঁছান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আইএনটিইউসির সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সিং। ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন, প্রদীপ চৌধুরী পরিবার নিয়ে ২৮ নম্বর স্ট্রিটের ৪৬ /২ ডি কোয়ার্টারে থাকেন। প্রদীপবাবু আমাকে জানিয়েছেন তার ছেলের কাছ থেকে ফোন পেয়ে তিনি বাড়িতে আসেন। তখন তিনি আবাসনের মধ্যে নিজের স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকত দেখেন।
জানা যায়, প্রদীপবাবুর আবাসনের সামনের এবং পিছনের দুদিকেরই দরজায় খোলা ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। এই এলাকায় কাছাকাছি কোন সিসিটিভি নেই।
চিত্তরঞ্জন থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ ইসমাইল আলী বলেন, প্রচুর পরিমাণ রক্ত আবাসনের একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দেহটি বাথরুমের কাছে পড়েছিল। দুষ্কৃতিরা ফিনাইল দিয়ে ঘরটা ধোওয়ার চেষ্টা করেছিলো । তবে প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জেনেছি, তারা কোনো রকম আওয়াজ এই আবাসন থেকে পাননি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা করা হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More posts