জামুড়িয়ায় বেসরকারি কারখানায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ / নিরাপত্তা রক্ষীদের বিরুদ্ধে গাড়ি থেকে ধাক্কা মারার অভিযোগ / পথ দূর্ঘটনায় রহস্যজনক মৃত্যু কর্মীর

পাবলিক নিউজঃ আসানসোল/ জামুরিয়া :–পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়ার বিজয়নগর শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার এক কর্মীর পথ দূর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো। মৃত কর্মীর পরিবারের সদস্য ও অন্য সহকর্মীদের অভিযোগ, কারখানার নিরাপত্তা রক্ষীরা গাড়ি করে নিয়ে যাওয়ার ঐ কর্মীকে ধাক্কা মারে। তাতে ঐ কর্মী রাস্তায় পড়ে গেলে পেছন থেকে আসা একটি তেল ট্যাঙ্কার তাকে পিষে দেয়। এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে মৃত কর্মীর পরিবারের সদস্য ও অন্যান্যরা পরিবারের ক্ষতি পূরণের কারখানায় বিক্ষোভ দেখানো শুরু করলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ চলে। পরে কারখানা কতৃপক্ষ ক্ষতি পূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জামুড়িয়া থানার হিজলগড়ার পাথরচুঁড়ের বাসিন্দা মৃত কর্মীর নাম সারথী মন্ডল (২২)। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যুবকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়।


ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, রবিবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ জামুড়িয়ার পাথরচুঁড়ের সারথী মন্ডলকে কোন একটি অভিযোগে জামুড়িয়া থানার কেন্দা ফাঁড়ি নিয়ে যায় জামুড়িয়া শিল্প তালুকের বেসরকারি ইস্পাত কারখানার বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী। অভিযোগ, সেই সময় রাস্তায় ঐ কর্মীর রহস্যজনকভাবে কোন পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটে। যদিও পুলিশ ময়নাতদন্তের সময় রিপোর্টের ভিত্তিতে জানায়, এদিন সকাল সাড়ে নটার সময় সারথী মন্ডল কারখানা থেকে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলো। সেই সময় জামুড়িয়ার চাকদোলা মোড়ের কাছে একটি তেল ট্যাঙ্কার তাকে রাস্তায় ধাক্কা মারে। তাতে সে গুরুতর জখম হয়।সঙ্গে সঙ্গে তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার খবর মৃতের পরিজন ও এলাকার বাসিন্দারা পাওয়ার পরে সকলেই এই ঘটনার দায় কারখানার নিরাপত্তা রক্ষীদের ওপর চাপিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। এর পাশাপাশি তারা মৃত ওই যুবকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পোষ্যর চাকরির দাবিতে কারখানা গেটে সকাল ১১টা থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কেন্দা ফাঁড়ির পুলিশ। পরে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি ( সেন্ট্রাল ২) বিমান কুমার মির্ধা ও জামুরিয়া থানার ওসি রাজশেখর মুখোপাধ্যায় কমব্যাট ফোর্স ও রেপিড এ্যাকশন ফোর্সকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন ।

পরে এই ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং, তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সিদ্ধার্থ রানা, শ্যামলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অসিত মন্ডল, হিজলগড়া পঞ্চায়েত উপপ্রধান শেখ জোজো সহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মী।পরে দুপুরে তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে এই ঘটনায় যারা প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে সরব হন। পরে কারখানা কতৃপক্ষ দাবি মতো ক্ষতি পূরণ দিতে রাজি হয়। তারপর কারখানা চত্বরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।এই প্রসঙ্গে পরে সিদ্ধার্থ রানা বলেন, কারখানা কতৃপক্ষ এককালীন ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ দেবে বলেছে। পাশাপাশি মৃত কর্মীর বাড়িতে কাজ করার মতো কেউ নেই। তাই তার বাবা ও মাকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে দেবে কারখানা কতৃপক্ষ। এর পাশাপাশি বিধায়ক তার ফান্ড থেকে ঐ পরিবারকে আরো ১ লক্ষ টাকা দেবেন। তিনি আরো বলেন, ঠিক কি ঘটনা ঘটেছে, তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More posts