ডিসেরগড় ব্রিজের রক্তাক্ত রাত, ড্রাইভারের মাথা ফাটানোর অভিযোগে বিক্ষোভ, কিন্তু দোষী কে—স্থানীয় গুন্ডা না পুলিশের ‘কালেকশন’ হাত?

পাবলিক নিউজ ডেস্ক আসানসোল :– আসানসোল থেকে পুরুলিয়া যাওয়ার পথে ডিসেরগড় ব্রিজ—এই নামটাই এখন রক্তের দাগে রাঙা হয়েছে।গতকাল রাত্রে এক বাহন চালকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ভয়াবহ ঘটনা শুধু একটা আক্রমণ নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের সড়কপথের অরাজকতার এক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ, চালককে টাকা দাবি করা হয়, টাকা না দেওয়ায় তাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যাতে আঘাতের মুহূর্ত স্পষ্ট—কিন্তু এর পিছনে কার হাত? স্থানীয় গুন্ডা, সিভিক ভলান্টিয়ার নাকি পুলিশেরই কোনো ‘অদৃশ্য’ দল? প্রশ্নগুলো উঠছে, কিন্তু উত্তর? অদৃশ্যই থেকে যাচ্ছে, যেন এই অঞ্চলের সড়কগুলো ‘ফ্রি ফর অল’—সবাই লুট করতে পারে, কিন্তু ন্যায়বিচার?সেটা তো দূরের কথা!
ঘটনার পর আজ ভোর ছয়টায় পুরুলিয়া জেলার ড্রাইভার সংগঠনের সদস্যরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ডিসেরগড় ব্রিজে পথ অবরোধ,বিক্ষোভ যেন এই অবরোধ গুলো এখন রুটিন হয়ে গেছে। দুপুর বারোটা পর্যন্ত চললো এই ‘জন-আন্দোলন’, পুলিশের আশ্বাস পেয়ে তবেই তুলে নেওয়া হয়েছে বিক্ষোভ। কুলটি থানার সাকতোড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে, কিন্তু কী করল?শুধু আশ্বাস?আসল দোষী ধরা পড়লো? না, সংগঠনই বলছে, ‘জড়িত কে—স্থানীয় কেউ না সিভিক ভলান্টিয়ার—সেটা স্পষ্ট নয়।’ অর্থাৎ, তদন্ত? সেটা তো শুরুই হয়নি, বা হয়তো হয়েছে কিন্তু ‘ঢেকেও’ রাখা হয়েছে। এই অঞ্চলে তো পুলিশের ‘কালেকশন’ কারুর অজানা নয়—গাড়ি থেকে টাকা আদায়, চালানের নামে লুটরাজ। স্থানীয়রা বলছেন, “পুলিশ বা সিভিক জড়িত নয়—তা জোর করে বলা যায় না।” কেন যায় না? কারণ প্রমাণ তো সবাই লুকিয়ে রাখে,যেন এই সড়কপথ গুলো ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’!
ভাইরাল ভিডিও দেখলে মনে হয়, এটা শুধু একটা আক্রমণ নয়, বরং সিস্টেমের ব্যর্থতার প্রতীক। কিন্তু স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সত্য উদঘাটিত হবে। ডিসেরগড় ব্রিজে সিসিটিভি আছে কি? তাহলে কাছাকাছি রাস্তায় কোথাও না কোথাও তো আছে—সেই ফুটেজ থেকে পুলিশ ছিল কি না, সেটা তো স্পষ্ট হবে। কিন্তু হবে কি? পুলিশ তো নিজেরাই তদন্ত করবে, আর ফুটেজ? হয়তো ‘হারিয়ে’ যাবে,যেমন অনেক ঘটনায় হয়।

এই অঞ্চলে তো ব্রিজগুলোই অস্থির আগে অ্যাক্সিডেন্ট, এখন আক্রমণ। ড্রাইভাররা বলছেন, “আমরা তো প্রতিদিন এই ভয়ে চালাই।” প্রশ্ন উঠছে এই ‘টাকা চাওয়া’র পিছনে কি বড় কোনো চক্রান্ত? স্থানীয় রাজনীতির হাত আছে কি? পুলিশের ‘অফিসিয়াল’ কালেকশনের সাথে এর যোগাযোগ কতটা? আর সিভিক ভলান্টিয়াররা তারা তো ‘ভলান্টিয়ার’, কিন্তু লুটের অংশীদার কি না?এই ঘটনা শুধু একটা চালকের আঘাত নয়, বরং পুরো সড়ক ব্যবস্থার কটাক্ষ। সরকার তো বলে ‘সেফ রোডস’, কিন্তু এখানে তো ‘সেফ’ মানে লুটের নিরাপত্তা! তদন্ত কবে শুরু হবে? আসল দোষীরা ধরা পড়বে কি? সিসিটিভি দেখানো হবে কি? প্রশ্নগুলো বাড়ছে, কিন্তু উত্তর? হয়তো কখনো না। এই অঞ্চলের মানুষ তো অভ্যস্ত—বিক্ষোভ করে, অবরোধ করে, তারপর ভুলে যায়। কিন্তু এবার? হয়তো এই ভাইরাল ভিডিওই চাপ সৃষ্টি করবে। নাকি আবারও ‘আশ্বাস’ দিয়ে শেষ? দেখা যাক, এই রক্তাক্ত ব্রিজের সত্য কতদিন লুকিয়ে থাকতে পারে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More posts